আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

সুষ্ঠু নির্বাচনেই গণতন্ত্র ফিরবে : আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

নিজস্ব প্রতিবেদক

জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে আনার জন্য সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের গুরুত্বের কথা জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ বলেছেন, এখন আমাদের প্রথম কাজ হবে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। গণতন্ত্র ফিরে আনতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করতে হবে। জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের মালিকানার ভিত্তিতে আগামীর বাংলাদেশ হবে জনপ্রতিনিধিত্বমূলক।

জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সংসদের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের চাওয়া পাওয়ার কথাগুলো বলতে পারবে, যা এখন কেউ বলতে পারছে না।তিনি সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকালে নগরীর কাজীর দেউরীস্থ আলমাস সিনেমার সামনে বিএনপির ৪৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির র‌্যালী পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

সমাবেশ শেষে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে আলমাস সিনেমার সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে কাজীর দেউরী, জুবলী রোড়, এনায়েত বাজার, তিনি পুলের মাথা হয়ে নিউ মার্কেট মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব নাজিমুর রহমানের পরিচালনায় সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শামসুল আলম।
আমীর খসরু বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় গণতন্ত্র ফেরার পথে যদি কেউ বাধা দিতে চায়, নির্বাচনকে বাধা দেওয়া মানে গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করা, বাংলাদেশের মানুষের মালিকানা বন্ধ করা এবং আগামীতে মানুষের রাজনৈতিক সংবিধানিক অধিকারে প্রতিবন্ধক সৃষ্টি করা। সুতরাং ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি বলেন, আজকে দক্ষিণ এশিয়াতে বিএনপি সবচেয়ে বৃহৎ রাজনৈতিক দল। এটার কারণ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের দেশপ্রেম, উন্নয়নের উদ্যোগ, চাষি, কৃষক শ্রমিক পেশাজীবি সবাইকে নিয়ে বাংলাদেশ। শহীদ জিয়া বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের চিন্তা চেতনায়, ভাবনায়, উদ্যোগে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় দিয়েছিলেন। তা পরবর্তীতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। এখন তারেক রহমানের নেতৃত্বে ফ্যাসিস্টমুক্ত এবং স্বৈরাচারমুক্ত দেশে আবার সেই নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখাচ্ছে আমাদের নেতা তারেক রহমান।

তিনি আরও বলেন, আপনারা দেখেছেন ইতোমধ্যে সমস্ত দেশের মানুষ তারেক রহমানের প্রতিটি স্বপ্নের সাথে নিজেদেরকে দেখতে পাচ্ছে। স্বপ্নগুলো কী? এক নম্বর স্বপ্ন হচ্ছে, দেশের মানুষের কর্মসংস্থান। তারেক রহমান বলেছেন, ক্ষমতায় দেশের মানুষ যদি আমাদের সরকারের দায়িত্ব দেয়, প্রথম ১৮ মাসে এক কোটি চাকরির ব্যবস্থা করা হবে। চাকরি করবে, ব্যবসা করবে, দেশে কর্মসংস্থান, বাইরে কর্মসংস্থান সবকিছুর পরিকল্পনা ইতোমধ্যে সমাপ্তি হয়েছে।
দেশের স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার বিষয়ে আমীর খসরু বলেন, দেশের মানুষের বিনামূল্যে প্রাথমিক চিকিৎসার সব ধরনের কার্যক্রম শেষ হয়েছে। অর্থাৎ বিএনপি যদি দায়িত্ব পায়, দেশের সাধারণ মানুষের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য পকেট থেকে কোনো টাকা খরচ করতে হবে না। দেশের মানুষের শিক্ষা এবং দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বিশাল বিনিয়োগের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।তিনি বলেন, এই স্লোগানটি শুধুমাত্র রাজনীতিকে গণতন্ত্রায়ণ নয়, অর্থনীতিকেও গণতন্ত্রায়ণ করতে হবে। অর্থনীতিকে গণতন্ত্রায়ণ করে বাংলাদেশের প্রত্যেক মানুষ যাতে আগামী বাংলাদেশে অর্থনীতিতে উন্নয়নের সহযোগিতা করতে পারে, অংশগ্রহণ করতে পারে, নিজেদের জীবনযাপনের মান উন্নয়ন করতে পারে, এটাই হবে আগামী বাংলাদেশ, তারেক রহমানের নেতৃত্বে।

আরও অনেক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
তিনি দেশের অর্থনীতি ও পরিকল্পনার বিষয়ে বলেন, দেশের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের জন্য বিশাল প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে। এছাড়া, আরও অনেক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে কামারকুমার থেকে শুরু করে যারা কাজ করছে, তাদের জন্য বিশাল প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে ইনশাল্লাহ। বাড়িতে বসে পণ্য তৈরি করে বিদেশি রপ্তানি করার ব্যবস্থা করা হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে শেয়ার বাজার, ব্যাংকিং সহ সবকিছু সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার মাধ্যমে সবাই যাতে এই সুযোগ পায়, সবাই যাতে ব্যবসা এবং চাকরিতে অংশগ্রহণ করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হবে।

তিনি বলেন, দেশের মানুষের হৃদয় জানে, আজকে বাংলাদেশে ধানের শীষের জোয়ার শুরু হয়েছে। এই জোয়ারকে কেউ বাধাগ্রস্ত করতে চাইলে তারা ভেসে যাবে। আমরা চাই সুষ্ঠু নির্বাচন। দেশের মানুষ যাকে ইচ্ছা নির্বাচিত করতে পারবে। এখন কেউ যদি মনে করে তারা নির্বাচিত হতে পারবে না, সেজন্য নির্বাচনের প্রয়োজন নেই, সেটা তাদের সমস্যা, এটা বাংলাদেশের মানুষের সমস্যা নয়। সুতরাং বার্তা পরিষ্কার, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সমস্ত জনগণ নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদেরকে গ্রামে গঞ্জে যেতে হবে, তারেক রহমানের নির্দেশিত খালকাটা প্রকল্প হাতে নিতে হবে। প্রত্যেক এলাকার খালগুলো কেটে পানির নিষ্কাশন ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে হবে। সবকিছু সমাধান হবে ইনশাল্লাহ। তারেক রহমান সাহেব ৩০ কোটি গাছ লাগাবেন। সকলে মিলে আগামী বাংলাদেশ করতে হবে। নেতা নয়, সকলের অবদান থাকতে হবে। এজন্য রাজনীতির সাথে সাথে আমরা অর্থনীতিকেও গণতন্ত্রের কথাও বলছি।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, আমরা এখন নির্বাচনের সড়কে ঢুকেছি। আগামী ফেব্রুয়ারীর নির্বাচনে ভোট দেয়ার জন্য জনগণ উন্মুখ হয়ে আছে। দেশের মানুষ ধানের শীষের অপেক্ষায় আছে। লক্ষ জনতা আজকে এখানে জমায়েত হয়েছে শুধুমাত্র গণতন্ত্রের যে অগ্রযাত্রায় আমরা নেমেছি, সেটাকে সফলভাবে আরো বেশি সমাদর করতে। এ গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে কেউ যাতে বাধাগ্রস্ত করতে না পারে সেদিকে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, গত ১৬ বছরে বিএনপির নেতৃত্বে দেশের মানুষ ভোটাধিকার রক্ষার সংগ্রাম করেছে।

আজকে শেখ হাসিনামুক্ত বাংলাদেশে আগামী ফেব্রুয়ারীর নির্বাচনের বিরুদ্ধে, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে, কিছু কিছু শক্তি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তাদের জন্য কোনো জায়গা দেওয়া হবে না। গণতন্ত্রের বিজয়ের পথে আমরা চলছি, দেশের মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। এ পথে যারা বাধাগ্রস্ত করবে আগামীদিনে দেশের মানুষ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করবে।


ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, আজকে দেশে নির্বাচনী আমেজ সৃষ্টি হয়েছে।নির্বাচন শেষ করতে হলে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে হাতে হাত মিলিয়ে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আগামী দিনগুলো চলতে হবে। কোন শক্তি যাতে নির্বাচনের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে না পারে, সেদিকে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ বলেন, একটি মহল আছে তারা রাজনীতি করবে, কিন্তু ভোটে যাবে না। গণতন্ত্র বিশ্বাস করবে না। তারা রাজনীতি করবে জনগণকে বাইরে রেখে।যেটা শেখ হাসিনা বারবার করেছে। আবারও কিছু শক্তি নেমেছে দেশের মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়ে তাদের মতো করে দেশ চালাতে। এটা বাংলাদেশের মানুষ কোনো দিনও গ্রহণ করবে না।

আবুল হাশেম বক্কর বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর এই দিন থেকে শপথ নিতে হবে। সকলে যার যার এলাকায় যেতে হবে, মানুষের ঘরে ঘরে যেতে হবে। আগামী দিনের যে কর্মসূচি, দেশের মানুষের সকল রাজনৈতিক, গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার যে রূপরেখা বিএনপি তৈরি করেছে, তা মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে।এতে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ব ইদ্রিস মিয়া, সদস্য সচিব লায়ন হেলাল উদ্দিন, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব এম এ আজিজ, এডভোকেট আবদুস সাত্তার, এস এম সাইফুল আলম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান প্রমুখ।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

পদক্ষেপ বাংলাদেশ এর বিজয় মাসের প্রথম প্রভাত ।

পদক্ষেপ বাংলাদেশ-এর আয়োজন, কর্মসূচী ব্যতিক্রম ও বৈচিত্র্যময়। তারই ধারাবাহিকতায় ঢাকার পরিবাগস্থ সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রের উন্মুক্ত মঞ্চে জাতীয় সংগঠন ও শিল্পীদের অংশগ্রহণে ‘বিজয় মাসের প্রথম প্রভাত’ শীর্ষক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ১ ডিসেম্বর ২০২৫, সোমবার সকাল ৭টায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সাংস্কৃতিক পর্ব—দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে : শিল্পবৃত্ত, পদক্ষেপ বাংলাদেশ। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে : কথা আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র, শিল্পবৃত্ত, ঢাকা স্বরকল্পন, মুক্তধারা সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র। একক আবৃত্তি করেন : মীর বরকত, নায়লা তারান্নুম চৌধুরী কাকলি। কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ করেন : গোবিন্দলাল সরকার, মো: তাজুল ইসলাম, খাইরুল আলম।

উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ। সম্মানিত অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন আবৃত্তিশিল্পী মীর বরকত, জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জেবুন্নেসা জেবা, উদয়ন স্কুল এন্ড কলেজ শিক্ষক সবিতা সাহা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পদক্ষেপ বাংলাদেশ-এর সভাপতি বাদল চৌধুরী। স্বাগব বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল্লাহ সাঈদ। ঘোষণাপত্র পাঠ করেন সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী মতিয়ারা মুক্তা।

ঘোষণাপত্রে বলা হয়- বহু ত্যাগ, সংগ্রাম আর প্রত্যাশার ফসল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। এ শুধু পতাকা আর জাতীয় সঙ্গীত বদল নয়, খোল-নলচে সব পাল্টে নতুন এক আদর্শকে রাষ্ট্র ও সমাজ জীবনে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্নের নবযাত্রা। এই স্বপ্নের প্রধান এবং একমাত্র উপজীব্য মানুষ। মানুষের কল্যাণ, মানুষের মুক্তি, মানুষের মর্যাদা এবং মানুষের স্বাধীন ভূমিই শেষ কথা। কত মাতা, কত ভগ্নি, কত জানা-অজানা নারী তাঁর সম্ভ্রম হারিয়েছে শুধু এই মানুষকে মানুষের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। মানুষ কল্পনাবিলাসী কিন্তু নিজেতো সে কাল্পনিক নয়Ñএ ভূমিতেই তার সৃষ্টি, বেড়ে ওঠা, ভালো-মন্দের স্বাদ নেয়া, অতঃপর ভূমিতেই মিলিয়ে যাওয়া। এ ভূমির প্রতি তার প্রচ- ভালোবাসা।

মাতৃক্রোড়ে যেমনিভাবে শিশু বেড়ে ওঠে; একইভাবে কাদা-মাটি গায়ে মেখে আলো-বাতাসে অবগাহন করে এই ভূমিকেই মাতৃক্রোড় ভেবে একদিন চিরবিদায় নেয় প্রতিটি মানবশিশু। জন্ম আর মৃত্যুতে যে ভূমিকে কখনো আলাদা করা যায় নাÑতারই অমার্যাদা করবে ভিনদেশী তস্কর! তা কি করে মেনে নেয় ধুলো-বালি গায়ে মেখে বেড়ে ওঠা এ জনপদের মানুষেরা। এ ভূমিরই সাহসী-ত্যাগী- পোড়খাওয়া এক নামÑশেখ মুজিব। মাটি আর মানুষের সাথে ছিলো যাঁর আজন্ম সখ্য, ভিনদেশী হায়েনার হিংস্র থাবায় বারবার ক্ষতবিক্ষত হয়েছে তাঁর হৃদপি-; তবুও ভূমি আর মানুষের স্বাধীনতায় অবিচল থেকেছেন তিনি।

তাঁরই অঙ্গুলী হেলনে সাড়ে সাত কোটি মানুষ পরিণত হয়েছে এক একজন নেতাজী সুভাষ বসু, ক্ষুদিরাম, সূর্যসেন, প্রীতিলতা, তিতুমীর, বাঘাযতিন, লক্ষ্মীবাই, ভগৎসিং, রফিক, শফিক, সালাম, জব্বার, সালাউদ্দিন, বরকত, আসাদ, মনুমিয়া’য়। এ গাঙ্গেয় বদ্বীপের তেরোশত নদীর জোয়ার আর পাখিদের কলতানে উচ্চারিত হয়েছে ভিনদেশী হায়েনার বিনাশ- ধ্বনি। লাঙলের ফলা থেকে তৈরি উর্বর মাটির প্রতিটি চাকা পরিণত হয়েছে শত্রুবিনাশী আনবিক বোমায়। বাঁশঝাড় উজাড় করে তৈরি হয়েছে চকচকে বেয়নেট।

নিঃশঙ্ক চিত্তে নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার অগ্নিপুরুষ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সঞ্চারিত হয়েছে সাড়ে সাত কোটি মানুষের প্রতিটি রক্ত কণিকায়Ñবিজয় অর্জিত হয়েছে মানুষের সংগ্রাম আর আত্মদানের। বিজয় মাসের সূচনালগ্নে আমরা নতুন করে উদ্দীপ্ত হতে চাইÑমাটি আর মানুষের কল্যাণ কামনায়। আমরা বিনাশ চাই সেই নরপশুদের যারা মাটির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে ভিনদেশী হায়েনাদের সঙ্গী হয়েছিলো মনুষত্বের বিনাশ সাধনে। সেই সাথে চাই আজকের এই দিনটিকে ‘মুক্তিযোদ্ধা দিবস’-এর সরকারি স্বীকৃতি। মাটি আর মানুষের জয় হোক, জয় হোক শুভ চিন্তা আর আদর্শের।

ঠাকুরগাঁওয়ে মির্জা পরিবারের দানে গড়ে উঠছে এতিম শিশু ও নারীর ক্ষমতায়ন কেন্দ্র 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পরিবারের দান করা জমিতে এতিম শিশুদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতে ও নারীর স্কিল ডেভলপমেন্টের জন্য গড়ে উঠছে মির্জা রুহুল আমিন এন্ড ফাতেমা মেমোরিয়াল কমপ্লেক্স। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের আদর্শ কলোনিতে কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ চলছে। 

 আর কমপ্লেক্সটি বাসমাহ ফাউন্ডেশনের তত্বাবধানে শত শত এতিম শিশুদের মৌলিক অধিকার পাওয়ার ঠিকানা হিসেবে পরিণত হবে। যেখানে এতিম শিশুরা খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা সহ গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক অধিকারগুলো বিনামূল্যে নিশ্চিৎ হবে। নারীদের স্কিল ডেভলপমেন্টে কাজ করবে। 

গত এক বছর যাবৎ এ কমপ্লেক্সটির কাজ শুরু হয়ে এখন পর্যন্ত চার ভাগের তিন ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ইতিমধ্যে শতাধিক এতিম শিশুকে নিয়ে কমপ্লেক্সটিতে প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এসব তথ্য নিশ্চিৎ করেছেন  কমপ্লেক্সে দায়িত্বে থাকা  বাসমাহ অরফানস হোম এর এডুকেশন ইনচার্জ আহম্মেদ আমিন।

তিনি আরও জানান, এই কমপ্লেক্সে বাসমাহ অরফানস হোম, বাসমাহ স্কুল এন্ড কালচারাল সেন্টার এবং বাসমাহ ওমেন্স এন্ড স্কিল ডেভলপমেন্ট সেন্টার হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করবে। বৃহস্পতিবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ। এক কক্ষে চলছিলো একটি দোয়ার আয়োজন। জানা যায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা ও দেশের মঙ্গল কামনায় মির্জা পরিবারের উদ্যোগে এতিম শিশুদের নিয়ে এ দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। 

ঠাকুরগাঁওয়ে এতিম শিশুদের মৌলিক অধিকার  ও নারীদের ডেভলপমেন্টের জন্য এমন একটি উদ্যোগকে বাস্তবায়নের পেছনের ব্যপারে জানতে চাইলে অরফান হোম এর এডুকেশন ইনচার্জ বলেন, আমাদের বাসমাহ ঠাকুরগাঁও সহ সারা দেশে পাঁচটি শাখা আছে। নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁর একটি শাখাতে মির্জা ফখরুল ইসলামের পরিবারের সদস্যগণ পরিদর্শন করেন।  আমাদের কার্যক্রেম তাদের ভালো লাগে এবং এতিম শিশুদের জন্য এমন উদ্যোগ ঠাকুরগাঁওয়ে বাস্তবায়নের জন্য তারা উৎসাহ প্রকাশ করেন এবং ৭৫ শতক জমি এতিমদের জন্য দান করেন৷ এই কর্মকর্তা বলেন বাসমাহ’র  সমস্ত পক্রিয়া মেনেই এটি গড়ে উঠছে।

বাসমাহর সিইও মীর সাখাওয়াত হোসাইন এর বরাতে প্রতিষ্ঠানটির এডুকেশন ইনচার্জ আরও বলেন  বাসমাহ ফাউন্ডেশনের তত্ত্ববধানে সারা দেশ জুড়ে সেবামূলক কার্যক্রম চলমান রয়েছে ।বাসমাহ স্কুল এন্ড কালচারাল সেন্টার,বাসমাহ ওরফান্স হোম,বাসমাহ উইমমেন্স স্কিল এন্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার।এ ছাড়াও শীতকালীন শীত বস্ত্র বিতরণ,কুরবানি প্রোগ্রাম,ইফতার প্রোগ্রাম পরিচালিত হয়।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ