আজঃ মঙ্গলবার ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

যানজট এড়াতে চউক’র তিন সড়ক উন্নয়নে ব্যায় হবে ৪ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা

চট্টগ্রাম ব্যুরো

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

চট্টগ্রাম মহানগরীতে উড়াল সড়ক থাকার পরও যানজট মারাত্বক আকার ধারণ করছে। বেড়েছে সড়ক দুর্ঘটনাও। প্রতিদিন নগরীর বিভিন্ন স্পটে যানজট লেগে থাকে। যানজটের কারণে অ্যাম্বুলেন্সের রোগী, শিক্ষার্থী, চাকরিজীবীসহ সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এদিকে অপরিকল্পিত বাসস্ট্যান্ডের কারণে নগরীর চার প্রবেশমুখ কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। নগরীর অক্সিজেন মোড়, শাহ আমানত সেতু চত্বর, কাপ্তাই রাস্তার মাথা এবং সিটি গেট-কর্নেল হাটে যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বেশিরভাগ সড়কের দুই পাশের ফুটপাত দখল করে চলছে ব্যবসা-বাণিজ্য। যত্রতত্র যানবাহন দাঁড়িয়ে থেকে যাত্রী ওঠা-নামা করানোর কারণে প্রতিটি মোড়েই এক ধরনের বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে।

এদিকে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) যানজট নিরসনে তিনটি সড়ক উন্নয়নের উদ্যাগ নিয়েছে। চট্টগ্রাম নগরীর গোলপাহাড় থেকে চট্টেশ্বরী মোড়ের মাত্র এক কিলোমিটারের একটু বেশি দৈর্ঘ্যের সড়কটি পার হতেই গাড়িতে কখনো লেগে যায় আধাঘণ্টা, কখনোবা আরও বেশি। এতে সড়কের দুই পাশে থাকা হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া-আসা করতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় নগরবাসীকে। বিশেষ করে রোগী আর তাদের স্বজনেরা নিয়মিত পড়ছেন দুর্ভোগে। নগরের অন্যতম ব্যস্ততম সেই সড়কটি সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক)।

এছাড়া যানজটপ্রবণ আরও একটি সড়ক সম্প্রসারণ এবং নতুন করে একটি সড়ক নির্মাণ করতে চায় সংস্থাটি। গুরুত্বপূর্ণ এই তিন সড়ক প্রকল্প এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ের ছাড়ের অপেক্ষায় রয়েছে। অনুমোদন মিললেই শুরু হবে এই তিন সড়কের উন্নয়ন কাজ। এতে চউক’র ব্যয় হবে চার হাজার ৫৫০ কোটি টাকা। সড়কগুলো নির্মাণ ও সম্প্রসারণ করা হলে সেসব এলাকায় যানজট অনেকটা কমে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে চউক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম বলেন, চউক’র তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রকল্প অর্থ মন্ত্রণালয়ের ছাড়ের অপেক্ষায় রয়েছে। তিনটি প্রকল্পের মধ্যে দুটি প্রকল্প সম্প্রতি পাঠানো হয়েছে এবং একটি প্রকল্প আরো আগে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পগুলোর অনুমোদন মিললে কাজ শুরু করতে পারবো। তিনি আরো বলেন, তিন সড়ক প্রকল্পের এলাকায় বর্তমানে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। এতে নগরবাসীকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হলে এই ভোগান্তি দূর হবে বলে আশা করছি।

চউক সূত্রে জানা গেছে, তিন প্রকল্পের মধ্যে একটি সড়ক নতুন করে নির্মাণ করা হবে। সম্প্রসারণ করা হবে বাকি দুটি সড়ক। এরমধ্যে নর্থ সাউথ-১ নামে একটি সড়ক নির্মাণ করা হবে। এটি নগরীর বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক রোডের সাদার্ন ইউনিভার্সিটি হয়ে বিএডিসি রোড হয়ে জাকির হোসেন সড়কের সঙ্গে যুক্ত হবে। এরপর সেটি পাহাড়তলী কলেজ হয়ে আমবাগান সড়কের সাথে মিলিত হবে।

অন্যদিকে, নগরীর গোলপাহাড় মোড় থেকে চট্টেশ্বরী মোড় পর্যন্ত যে সড়ক রয়েছে সেটি সম্প্রসারণ করা হবে। আর নগরীর ফিরিঙ্গী বাজার মোড় থেকে সদরঘাট রাজ হোটেল পর্যন্ত (কবি নজরুল ইসলাম সড়ক) সড়কটিও সম্প্রসারণ করা হবে।
প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত চউক কর্মকর্তারা জানান, নর্থ সাউথ-১ সড়কটি হবে ৮০ ফিট প্রশস্ত। চার কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। এরমধ্যে ভূমি অধিগ্রহণেই ব্যয় হবে ১ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা এবং বাকি টাকা ব্যয় হবে সড়ক নির্মাণে। মেহেদীবাগ সড়কটি ৬০ ফিটে সম্প্রসারণ করা হবে।

যা বর্তমানে কোথাও কোথাও ২৫ ফিট থেকে ৪০ ফিট পর্যন্ত প্রশস্ত রয়েছে। এক দশমিক ১৩ কিলোমিটারের সড়কটি সম্প্রসারণে ব্যয় হবে ৩৯৫ কোটি টাকা। এরমধ্যে ১৬৭ কোটি টাকা ব্যয় হবে উন্নয়নে এবং ২২৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে ভূমি অধিগ্রহণে। সড়কটি নির্মাণে কিছু বহুতল ভবন ভাঙা পড়বে। কবি নজরুল ইসলাম সড়ক সম্প্রসারণে ব্যয় হবে ১৫৫ কোটি টাকা। যেখানে ১০৩ কোটি টাকা ভূমি অধিগ্রহণে এবং বাকি অর্থ উন্নয়ন কাজে ব্যয় হবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মালেক শাহ (রাহ:) হুজুরের বার্ষিক ফাতিহা উপলক্ষে কুতুবদিয়ার ইউএনও’র সঙ্গে দরবার কমিটির মতবিনিময়

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

আগামী ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য হজরত শাহ আব্দুল মালেক আল কুতুবী মুহিউদ্দিন আজমী (রাহ:) এর ২৬তম বার্ষিক ওরস-ফাতিহা শরীফ উপলক্ষে কুতুব শরীফ দরবারে আগত লাখ-লাখ ভক্ত-অনুরক্তদের নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন যাতায়াত নিশ্চিত করতে কুতুবদিয়া উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ মতবিনিময় সভা করেছে কুতুব শরীফ দরবার কর্তৃপক্ষ।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন কুতুব শরীফ দরবারের প্রধান উপদেষ্টা শাহজাদা আল্লামা এম. এম. মুনিরুল মন্নান আল-মাদানী। সভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ জামশেদ আলম রানার সঙ্গে বার্ষিক ওরস ও ফাতিহা শরীফ উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতি ও জনদুর্ভোগ লাঘবে করণীয় বিষয়ে আলোচনা করা হয়।


দরবার কর্তৃপক্ষ সভায় জানান, বার্ষিক ওরস ও ফাতিহা শরীফ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে সমুদ্রপথ পাড়ি দিয়ে অন্তত ৮ থেকে ১০ লাখ ভক্ত-অনুরক্ত কুতুব শরীফ দরবারে আগমন করেন। এ সময় যেন কোনো প্রকার হয়রানি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বা বিশৃঙ্খলা না ঘটে, সে লক্ষ্যে আগামী ২৮, ২৯, ৩০ ও ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পর্যাপ্ত ডেনিস বোটসহ অন্যান্য নৌযান ২৪ ঘণ্টা চালু রাখা, নৌযানে সর্বোচ্চ ৫০ জন যাত্রী পরিবহন নিশ্চিত করা, জেটিঘাটসমূহে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন, সার্বক্ষণিক প্রশাসনিক নজরদারি, মোবাইল টয়লেট স্থাপনসহ সম্ভাব্য আরও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ জামশেদ আলম রানা দরবার কর্তৃপক্ষের দাবিগুলো আন্তরিকতার সঙ্গে শুনে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে সাধারণ ভক্ত-অনুরক্তদের সর্বোচ্চ সুবিধা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাকিবুল আলম। এছাড়া দরবার কর্তৃক গঠিত উপ-কমিটির সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আকবর খান, কুতুবদিয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম. এম. হাছান কুতুবী এবং মোরশেদুল মন্নান।
এ সময় স্থানীয় সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নজরুল ইসলাম, আবুল কাশেম, শাহেদুল ইসলাম মনির, মো: মনিরুল ইসলাম, আনিছুর রহমান হীরু, হাছান মাহমুদ সুজন, মহিউদ্দিন, নাছির উদ্দিন, হানিফ কুতুবী সহ আরও অনেকে।

চট্টগ্রামে এক বছরে প্রায় ৩৭০০ ডেঙ্গু রোগীর সন্ধান : ৮০ শতাংশই বাসিন্দা নগরীর

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

চট্টগ্রামে চিকনগুনিয়া-ডেঙ্গু এবং জিকা- মশাবাহিত এই তিন রোগের মারাত্বক ঝুঁকিতে রয়েছে। চট্টগ্রামে এক বছরে প্রায় ৩৭০০ ডেঙ্গু রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে যার ৮০ শতাংশই নগরীর বাসিন্দা। এদিকে চিকনগুনিয়ার সংক্রমণের প্রকোপ বেড়েছে একেবারে হঠাৎ করে এমনটি উঠে এসেছে এক গবেষণায়।

অন্যদিকে চট্টগ্রামে মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে তরুণদের আক্রান্তের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এক বছরে চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই তরুণ। আর চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীও পাওয়া গেছে চলতি বছর। বেসরকারি সংস্থা এসপেরিয়া হেলথ রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে গত জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে চালানো এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের উপস্থিতিতে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গবেষণার জন্য নির্ধারিত রোগীদের মধ্যে অনেকের চিকুনগুনিয়ার সঙ্গে ডেঙ্গু-জিকা ভাইরাসও শনাক্ত হয়েছে। প্রতি ১০০ জন চিকনগুনিয়া রোগে আক্রান্তের মধ্যে ১ দশমিক ১ শতাংশ ডেঙ্গু এবং শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ জিকা ভাইরাসে আক্রান্তও পাওয়া গেছে। এই সহ-সংক্রমণ এবারের পরিস্থিতিকে জটিল করেছে।

গবেষণাকর্মে যুক্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. আদনান মান্নান বলেন, আমরা যেটা পেয়েছি, ২০২৫ সালে অর্থাৎ চলতি বছরে এসে চট্টগ্রামে চিকনগুনিয়ার প্রভাব হঠাৎ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়ে গেছে। ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এখানে চিকনগুনিয়ার এত প্রকোপ ছিল না। গত বছর সবমিলিয়ে চট্টগ্রামে মাত্র সাতশ-র মতো চিকনগুনিয়ায় আক্রান্ত রোগী পাওয়া গিয়েছিল। এবার আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ৭০০ বা তারও কিছু বেশি। আর শহরে আক্রান্তের হারটা ছিল বেশি, প্রায় ৮০ শতাংশ। তাহলে দেখা যাচ্ছে, ডেঙ্গুর পাশাপাশি চিকনগুনিয়াও এখন জনস্বাস্থ্যের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

জানানো হয়েছে, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক এইচ এম হামিদুল্লাহ মেহেদী, রেলওয়ে হাসপাতালের চিকিৎসক আবুল ফয়সাল মোহাম্মদ নুরুদ্দিন ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. আদনান মান্নানের নেতৃত্বে গবেষক দলে আরও ছিলেন- চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ডা. এম এ সাত্তার, ডা. মারুফুল কাদের, ডা. নুর মোহাম্মদ, ডা. হিরন্ময় দত্ত, ডা. ইশতিয়াক আহমদ, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ডা. এ এস এম লুতফুল কবির শিমুল, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের ডা. রজত বিশ্বাস, ইউএসটিসির আইএএইচএস এর ডা. আয়েশা আহমেদ, এপোলো ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের ডা. মোহাম্মদ আকরাম হোসেন, নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. অরিন্দম সিং পুলক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিয়ারিং বিভাগের ড. মো. মাহবুব হাসান ও মহব্বত হোসেন, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এএমএএম জুনায়েদ সিদ্দিকি।

চট্টগ্রামের ১১০০ রোগীর ওপর ভিত্তি করে চিকনগুনিয়া নিয়ে করা গবেষণার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম নগরীর ৭টি এলাকা এবং সংলগ্ন তিনটি উপজেলা চিকনগুনিয়া সংক্রমণের ‘হটস্পট’ হয়ে ওঠে। এগুলো হচ্ছে- নগরীর কোতোয়ালী, বাকলিয়া, ডবলমুরিং, আগ্রাবাদ, চকবাজার, হালিশহর ও পাঁচলাইশ এবং সীতাকুণ্ড, বোয়ালখালী ও আনোয়ারা উপজেলা। তবে আক্রান্তদের ৮০ শতাংশই নগরীর বাসিন্দা। চিকনগুনিয়ায় আক্রান্ত শতভাগ রোগী তীব্র ও দীর্ঘস্থায়ী অস্থিসন্ধির ব্যথায় ভুগেছেন। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ রোগী তিন মাসেরও বেশি সময় চিকনগুনিয়ার প্রভাব ভোগ করেছেন। এছাড়া ৪৫ শতাংশ রোগীর শরীর ফোলা ছিল।
একেকজন রোগীকে চিকিৎসায় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা ব্যয় করতে হয়েছে। তবে সচেতনতার অভাবে পরীক্ষা না করা এবং কিটের স্বল্পতা ও ভুল রোগ নির্ণয়ের কারণে অনেকে চিকনগুনিয়ায় আক্রান্ত হলেও পরীক্ষায় শনাক্ত হননি।

আদনান মান্নান বলেন, চিকনগুনিয়া এখন শুধুমাত্র একটি সাধারণ ও সাময়িক জ্বরের রোগ নয়। এটার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব তৈরি হচ্ছে। এটা মোকাবেলার জন্য আলাদা কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। জনসাধারণকেও সচেতন করতে হবে। শুধুমাত্র ডেঙ্গু মোকাবেলার কৌশল দিয়ে চিকনগুনিয়া রোধ করা যাবে না।

অন্যদিকে ডেঙ্গু আক্রান্ত মোট ১৭৯৭ জন রোগীর ক্লিনিকাল এবং বায়োলজিক্যাল ডেটা নিয়ে গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যে বলা হয়েছে, সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে তরুণ জনগোষ্ঠী, যাদের বয়স ১৮ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে এবং আক্রান্তের হার ৪৮ দশমিক ৪ শতাংশ। শিশু-কিশোর আক্রান্তের হার ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ। মধ্যবয়সী ও প্রাপ্তবয়স্ক মিলিয়ে ২২ শতাংশ আক্রান্ত হয়েছেন।
ক্লিনিক্যাল উপসর্গ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ডেঙ্গু আক্রান্ত প্রায় সব রোগীরই জ্বর ছিল। বমিভাব ও বমি, মাথাব্যথা, মাংসপেশি ও চোখের পেছনে ব্যথা, পেটব্যথা এবং ডায়রিয়ার মতো উপসর্গ উল্লেখযোগ্য হারে ছিল।

গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশের পর বক্তব্যে সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘নগর এলাকায় ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ শুধু স্বাস্থ্যঝুঁকিই নয়, এটি একটি বড় জনস্বাস্থ্য ও নগর ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ। মশার প্রজননস্থল, মৌসুমি ও জলবায়ুগত প্রভাব, নগরের অবকাঠামো এবং মানুষের আচরণ—এসব বিষয় বৈজ্ঞানিকভাবে বিশ্লেষণ না করলে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম দীর্ঘমেয়াদে সফল হবে না।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ