আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

দোকান বন্ধ করে নয়, অগ্নি নিরাপত্তায় প্রযুক্তিগত উপায় বের করতে হবে: সুজন

ডেস্ক নিউজ:

দোকান বন্ধ করে নয়, অগ্নি নিরাপত্তায় প্রযুক্তিগত উপায় বের করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। আজ বুধবার (৬ মার্চ ২০২৪ইং) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অগ্নি নিরাপত্তায় ঢালাওভাবে দোকান কিংবা রেস্টুরেন্ট বন্ধ না করে প্রযুক্তিগত উপায় খুঁেজ বের করার তাগিদ দিয়েছেন তিনি।

এসময় সুজন বলেন, সম্প্রতি ঢাকার বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ বহুতল ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ৪৬ জনের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে সেবা সংস্থাগুলো। অভিযানে জরিমানার পাশাপাশি এসব রেস্তোরাকে সিলগালা করে দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। আর সরকারি যে সব প্রতিষ্ঠান রেস্টুরেন্ট বন্ধের অভিযানে নেমেছে তাদের মধ্যে নেই কোনো সমš^য়। যে যেমন ভাবে পারছেন দায়িত্ব পালনের নামে সিলগালা করে দিচ্ছেন হোটেল কিংবা রেস্টুরেন্ট। হঠাৎ করে এসব অভিযানে আতংকিত হয়ে পড়েছে রেস্তোরা মালিকগণ। পাশাপাশি এসব রেস্তোরায় কর্মরত কর্মচারীরা উদ্বেগ ও উৎকন্ঠিত। আর কয়দিন পরেই পবিত্র মাহে রমজান, এরপর পবিত্র ঈদ উল ফিতর। হঠাৎ করে এসব হোটেল-রেস্তোরা বন্ধ করে দিলে এ ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টদের জীবন ঝুঁকিতে পড়বে। এর ফলে সামাজিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। তাই রাতারাতি দোকান কিংবা রেস্টুরেন্ট বন্ধে এ অভিযানের সুফল মিলবে না বলে মনে করেন তিনি। বরঞ্চ সমš^য় ছাড়া অভিযান পরিচালনা করে সাময়িক জরিমানা কিংবা দোকান সিলগালা করার ফলে পুরো কার্যক্রমই প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, বর্তমান সময়ে রেস্টুরেন্ট ব্যবসাটি একটি শিল্পে পরিণত হয়েছে। দৈনন্দিন জীবনের ব্যস্ততা কিংবা শখের বসে রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাওয়ার একটা সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। ফলত অনেক শিক্ষিত তরুনও পড়ালেখা শেষ করে এ ব্যবসায় আগ্রহী হয়ে উঠেছে। তাছাড়া উন্নত বিশে^র সাথে তাল মিলিয়ে দেশে নিত্য নতুন খাবারের ব্র্যান্ডের আবির্ভাব ঘটেছে যা দেশের অর্থনীতির জন্য একটি শুভ সংবাদও বটে। রেস্টুরেন্ট ব্যবসার প্রসারে এ শিল্পে বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থানও হয়েছে। তরুন সমাজের একটি বিশাল অংশ প্রত্য¶ এবং পরো¶ভাবে এ শিল্পের সাথে জড়িত। এ শিল্প আমাদের কৃষি, পর্যটনসহ জাতীয় অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখছে। দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের সাথে সাথে আগামীতে এ শিল্প আরো ব্যাপক প্রসার লাভ করবে। সুজন আরো বলেন, আমাদের জানামতে একটি রেস্টুরেন্ট ব্যবসা করতে কমপক্ষে ৮-১০টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র নিতে হয়। নকশা, অগ্নি নিরাপত্তা, লোকেশন ছাড়াও বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে ছাড়পত্র দেয়া হয়। তাহলে কিভাবে প্রশাসনের নাকের ডগায় একটি বিল্ডিংয়ে ৭-৮টি কিংবা ১০টি রেস্টুরেন্টের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে? এক্ষেত্রে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, সিটি কর্পোরেশন, ফায়ার সার্ভিস কিংবা অন্যান্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানেরই ভ‚মিকা কি ছিলো তাও খুঁজে বের করা দরকার বলে মনে করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক এই প্রশাসক। তিনি আরো বলেন, দেশে পাইপ লাইনের গ্যাসের সংকটের কারণে নিকট অতীতে এলপিজির ব্যবহার বেড়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, ব্যাপক হারে এলপিজির ব্যবহার বাড়লেও এর সুষ্টু ব্যবহার, নিয়ন্ত্রণ, নিরাপত্তা কিংবা দুর্ঘটনা নিয়ে কোন প্রকার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা কখনো করা হয়েছে কি-না তা আমার জানা নেই। এলপিজির যত্রতত্র ব্যবহারের পাশাপাশি বেড়েছে এর দুর্ঘটনাও। তাই এলপিজির ব্যবহারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে অগ্নি নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে বলেও মনে করেন তিনি। এছাড়া এর নিরাপত্তাজনিত উন্নত প্রযুক্তিও খুঁজে বের করতে হবে। শুধুমাত্র দোকান কিংবা রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে এর ব্যবহারও বন্ধ করা যাবে না বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি। তাই রেস্টুরেন্ট ব্যবসার মতো একটি আভিজাতিক ব্যবসাকে জরিমানা কিংবা সিলগালা করে বন্ধ করে না দিয়ে এর অগ্নি নিরাপত্তায় প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানের জন্য সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ জানান খোরশেদ আলম সুজন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রামে স্কুল ও দোকানে আগুন

চট্টগ্রাম মহানগরীর ইপিজেড থানাধীন কলসি দিঘির পাড় উত্তর রেল গেট এলাকায় একটি কেজি স্কুল ও পাশের দোকানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার ভোরে হযরত শাহ আলী কেজি স্কুল ও দোকানে আগুন লাগে।

সিইপিজেড ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শাহাদাত হোসেন জানান, ভোরে খবর পেয়ে সোয়া ৬টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। প্রায় ৪০ মিনিটের চেষ্টায় সকাল পৌনে ৭ টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। তবে দ্রুত পদক্ষেপে প্রায় ৫ লাখ টাকার মালামাল উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে, তা জানা যায়নি।

মশা নিধনে আমেরিকান প্রযুক্তির লার্ভিসাইড বিটিআই ব্যবহার শুরু চসিকের।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন প্রথমবারের মতো মশা নিয়ন্ত্রণে আমেরিকান প্রযুক্তির লার্ভিসাইড বিটিআই ব্যবহারের কার্যক্রম শুরু করেছে। সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের নির্দেশক্রমে সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় ৩৯ নং দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ড কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি শুরু হয়। কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব মো. আশরাফুল আমিন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মোঃ শরফুল ইসলাম মাহি, কীটতত্ত্ববিদ রাশেদ চৌধুরী এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) মশা নিয়ন্ত্রণে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করে নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর আগে গত ২৬ মার্চ নগরীর ১৭ নম্বর বাকলিয়া ওয়ার্ডের সৈয়দ শাহ রোডের সামনের খালে পরীক্ষামূলকভাবে বিটিআই লার্ভিসাইড প্রয়োগ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে আজ থেকে ওয়ার্ড পর্যায়ে বিটিআই প্রয়োগ শুরু করল চসিক।

চসিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত ফগিং, লার্ভিসাইড ছিটানো, নালা–নর্দমা পরিষ্কার, আবর্জনা অপসারণ এবং জনসচেতনতা কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে। নতুন প্রজন্মের আমেরিকান প্রযুক্তির বিটিআই ব্যবহারে মশার লার্ভা ধ্বংসে আরও কার্যকর ফল পাওয়া যাবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।

বিটিআই হলো একটি প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন ব্যাকটেরিয়াভিত্তিক লার্ভিসাইড, যা বিশেষভাবে মশা, ব্ল্যাক ফ্লাই ও ফাঙ্গাস গ্ন্যাটের লার্ভা দমনে ব্যবহৃত হয়। এটি পানিতে প্রয়োগ করার পর লার্ভা খাদ্যের সঙ্গে বিটিআই গ্রহণ করে এবং ব্যাকটেরিয়ার উৎপাদিত ক্রিস্টাল প্রোটিন টক্সিন লার্ভার পরিপাকতন্ত্রে কার্যকর হয়ে তাদের দ্রুত নিধন ঘটায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বিটিআই মানুষের শরীর, গৃহপালিত প্রাণী, মাছসহ অন্যান্য পরিবেশবান্ধব প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর নয়; এমনকি উদ্ভিদ ও জলজ বাস্তুতন্ত্রেও কোনো বিষাক্ত প্রভাব ফেলে না। বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গু, জিকা ও চিকুনগুনিয়ার মতো বাহক–বাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে এটি একটি নিরাপদ ও বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত সমাধান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ