আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামে পরিষ্কার ও যান নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীরা

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চট্টগ্রাম মহানগরে ট্রাফিক ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়ায় বিভিন্ন মোড়ে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। গত মঙ্গলবারের মত গতকাল বুধবারও এমন চিত্র দেখা গেছে। সকাল থেকে নগরীর কোথাও কোনো ট্রাফিক, পুলিশ বা ব্যারিকেড দেখা যায়নি। শিক্ষার্থীরা কেউ রাস্তা-ফুটপাতের ময়লা পরিষ্কার করছেন। কেউ সড়কের মাঝখানে দাঁড়িয়ে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করছেন। তবে এরা কেউ পরিচ্ছন্ন কর্মী বা ট্রাফিক পুলিশ নন। এরপরও শহরের সৌন্দর্য বাড়াতে এবং সড়কের শৃঙ্খলা নিশ্চিতে কাজ করছেন তারা।
আলাপকালে তারা জানায়, এরা সবাই ছাত্র। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর দেশ ছেড়ে পালান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ভেঙে পড়ে চট্টগ্রাম শহরের দেশের ট্রাফিক ব্যবস্থা। রাস্তায় দেখা যায়নি কোনো ট্রাফিক পুলিশ। এ অবস্থায় সড়কের শৃঙ্খলা নিশ্চিতে মাঠে নামে বলে তারা জানায়। স্বেচ্ছায় তারা ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকার পাশাপাশি পরিচ্ছন্নকর্মীরও দায়িত্ব পালন করেন। তাদের এ কার্যক্রমে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন সাধারণ লোকজন। একইসঙ্গে তাদের প্রশংসা করেন সবাই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তাদের প্রশংসা ভাসান অনেকে। কয়েক জায়গায় স্থানীয় লোকজন ও পথচারী তাদের খাবার ও পানি দিয়ে প্রকাশ করেন ভালোবাসা।
নগরের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শনে দেখা গেছে, বহাদ্দারহাট, মুরাদপুর, ২নং গেট, জিইসি মোড়, টাইগারপাস, প্রবর্তক মোড়, নিউমার্কেট মোড়, চকবাজার, বড়পোলসহ বিভিন্ন জায়গায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছাত্ররা যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করছেন। তারা যেখানে–সেখানে যাত্রীবাহী গাড়ি দাঁড়াতে দিচ্ছিল না। কারো রাস্তা পার হতে সমস্যা হলে গাড়ি থামিয়ে পারও করে দেন। মোটরসাইকেল আরোহীদের হেলমেট না থাকলে পরবর্তীতে হেলমেট পরার পরামর্শ দেন। এছাড়া অনেক জায়গায় ঝাঁড়ু দিয়ে রাস্তাও পরিষ্কার করছিল তারা। সাফ করেন ময়লা-আবর্জনা। এ বিষয়ে ছাত্ররা জানান, ‘লাখো ছাত্র-জনতার অর্জিত দেশ,রাখবো মোরা ক্লিন বাংলাদেশ’ স্লোগানে তারা সড়ক পরিষ্কার ও ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট কার্যক্রম শুরু করেন।
২ নম্বর গেইটে সালাম নামে এক ছাত্র বলেন, শহরে এ মুহূর্তে ট্রাফিক পুলিশ নেই। সড়কে বিশৃঙ্খলা দেখা যাচ্ছে। তাই আমরা দায়িত্ব পালন করছি। এক ছাত্র বলেন, স্বেচ্ছায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছি। নগরবাসীকে একটা সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন শহর উপহার দিতে চাই। সুমাইয়া রহমান নামে এক শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের বলেন, যেহেতু এখন আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা নেই তাই আমরা নিজ উদ্যোগে দায়িত্ব নিয়ে চট্টগ্রামের সড়ক এবং ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে নেমে এসেছি।
চকবাজার গোলজার মোড়ে দেখা গেছে, গাড়ি থামিয়ে পথচারী পারাপারে সহযোগিতা করছেন ছাত্ররা। এসময় পারভেজ নামে এক পথচারী বলেন, ছাত্ররা তাদের আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটিয়েছেন। এতে তারা তাদের শক্তি দেখিয়ে দিয়েছে। এখন তারা রাস্তায় নেমে এসেছে। তারা সবকিছু সুন্দরভাবেই ম্যানেজ করছেন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

‎শাহজাদপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে আনুষ্ঠানিকভাবে দলিল পুড়িয়ে ধ্বংস।


‎সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে মালিক শনাক্ত না হওয়া বিপুল সংখ্যক নিবন্ধিত দলিল আনুষ্ঠানিকভাবে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে।
জানা যায় ২০১৭ ও ২০১৮ সালে নিবন্ধিত এসব দলিল ডেলিভারি না নেওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে অফিসে জমিয়ে রাখা ছিলো। মালিকানা যাচাইয়ের জন্য একাধিকবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও নির্ধারিত সময়ে কেউ উপস্থিত না হওয়ায় কর্তৃপক্ষ দলিলগুলো ধ্বংসের সিদ্ধান্ত নেয়।

উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার মোঃ রবিউল ইসলাম বলেছেন, মালিকবিহীন দলিল সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা নেই এবং নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি এড়াতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী নোটিশ প্রকাশ, সময়সীমা প্রদান ও যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করার পর দলিলগুলো ধ্বংস করা হয়েছে।স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেছেন, মালিকহীন দলিল অনেক সময় দালালচক্রের অপব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি করে।

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ