আজঃ শুক্রবার ১৪ মার্চ, ২০২৫

অব্যাহত বর্ষণে চট্টগ্রাম মহানগরীর নিম্মাঞ্চল প্লাবিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

বন্দর নগরী চট্টগ্রামে অব্যাহত ভারী বর্ষণে নিম্নাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। বেশিরভাগ এলাকার সড়ক পানিতে ডুবে গেছে। বাসা-বাড়িতে ঢুকেছে পানি। এছাড়া সড়কেও গণপরিবহন কম চলতে দেখা গেছে। ফলে কর্মস্থলে যেতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। টানা বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারণে অনেক পোশাক কারখানাও বৃহস্পতিবার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আবহাওয়ার কার্যালয়ের সহকারি পূর্বাভাস কর্মকর্তা আবদুল বারেক জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় ১৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর সকাল ৯টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘন্টায় ১৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত, ভোর ছয়টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ৮৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
চট্টগ্রাম পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘন্টায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম নগরী ও পাহাড়ধসের সম্ভাবনা আছে।
সরেজমিনে নগরীর প্রবর্তক মোড় ও চকবাজার এলাকায় দেখা যায়, টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে কোমর পরিমাণ পানি জমে গেছে। সড়ক পানিতে ডুবে যাওয়ার কারণে তেমন গণপরিবহন চলতে দেখা যায়নি। দুই একটি চললেও সেখানে দ্বিগুনের বেশি ভাড়া চাওয়া হচ্ছে। উপায় না পেয়ে রিকশা ও ভ্যানগাড়িতে চড়ে অনেককে কর্মস্থলে যেতে দেখা গেছে। কোমর পরিমাণ পানিতেই অনেককে হেঁটে গন্তব্যস্থলে যেতেও দেখা গেছে।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে নগরীর বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, শুলকবহর, বাদুরতলা, জিইসি মোড়, দুই নম্বর গেইট, পাঁচলাইশ, হালিশহরসহ আরও বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এসব এলাকার অনেক বাসাবাড়ির নিচতলা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাটে পানি ঢুকে গেছে।
নগরীর পাঁচলাইশ এলাকার বাসিন্দা মো. হাসান বলেন, টানা পাঁচ-ছয়দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। মাঝারি বা ভারী বৃষ্টি হলেই নগরীতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পানির কারণে বাসা থেকে বের হতে পারছি না। নিচের সিঁড়ি পর্যন্ত পানি এসে গেছে। প্রয়োজনীয় কাজ করা যাচ্ছে না। বাচ্চাদের স্কুল খুললেও তাদের পাঠাতে পারছি না।
নগরীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানভীর ইলাহী বলেন, জলাবদ্ধতার চট্টগ্রামের অনেক জায়গায় পানি উঠে গেছে। বুধবারও পানি ছিল। ক্লাসে যেতে পারিনি। যারা গেছে তাদের থেকে নোট নিয়েছি। অনেক স্যাররাও পানির কারণে ভার্সিটিতে যেতে পারেনি বলে শুনেছি।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ভারি বৃষ্টির কারণে খাল ও নালা দিয়ে পানি যেতে পারছে না। তাই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের একাধিক টিম নগরীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে কাজ করছে। বৃষ্টি কমলেই পানি আস্তে আস্তে নেমে আসবে বলে তিনি জানান।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কিডনি চিকিৎসা সহজলভ্য করতে হবে:চসিক মেয়র

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, দেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, অথচ প্রয়োজনীয় চিকিৎসার অভাবে তারা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। চিকিৎসার ব্যয়ভার অধিকাংশ মানুষের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।তাই কিডনি চিকিৎসা সহজলভ্য করতে হলে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের সমন্বয় প্রয়োজন।

বৃহস্পতিবার বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মেয়র বলেন, কিডনি রোগের চিকিৎসায় অন্যতম প্রধান উপায় হলো ডায়ালাইসিস। কিন্তু চট্টগ্রামের মতো বড় শহরেও ডায়ালাইসিস সেন্টারের সংখ্যা সীমিত। এতে রোগীদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় এবং অনেকে সময়মতো চিকিৎসা পান না। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নগরবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে চায়, তাই আমরা চাই নগরীতে ডায়ালাইসিস সেন্টারের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হোক। তিনি আরও বলেন, সরকারি হাসপাতালগুলোতে কম খরচে বা বিনামূল্যে ডায়ালাইসিস সেবা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি, বেসরকারি হাসপাতালগুলোকেও এ বিষয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।

কিডনি রোগের অন্যতম কারণ সম্পর্কে সচেতনতার অভাবের কথা উল্লেখ করে মেয়র বলেন, শুরুতে এই রোগ ধরা না পড়লে পরবর্তীতে এটি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। তাই কিডনি রোগের বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম ও সামাজিক সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষকে কিডনি রোগের ঝুঁকি সম্পর্কে জানাতে হবে। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও পর্যাপ্ত পানি পান করার গুরুত্ব বোঝাতে হবে। শুধু চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নই যথেষ্ট নয়, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানান মেয়র। তিনি বলেন, শুধু কিডনি রোগ নয়, অন্যান্য জটিল রোগের চিকিৎসা সহজলভ্য করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। চট্টগ্রামে একটি অত্যাধুনিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে কিডনি রোগীদের জন্য বিশেষ সেবা নিশ্চিত করা হবে।

প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কিডনী রোগ বিভাগ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় বৃহস্পতিবার বিশ্ব কিডনী দিবস ‘২০২৫ পালিত হয়েছে। এবারের কিডনী দিবসের প্রতিপাদ্য ’আপনার কিডনী কি সুস্থ? দ্রুত শনাক্ত করুন, কিডনী স্বাস্থ্য সুরক্ষা করুন।’
বিশ্ব কিডনী দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত কর্মচারীদের প্রাথমিক কিডনী রোগ সনাক্তকরন বিষয়ক সপ্তাহ ব্যাপী কর্মসূচী আগামী ১২ থেকে ১৭ এপ্রিল নেফ্রোলজি বিভাগে আয়োজন করা হয়েছে।

এছাড়াও কিডনী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বৈজ্ঞানিক সেমিনার, আলোচনা সভা, রেলি, হাসপাতালে আগত রোগী ও স্বজনদের মাঝে সচেতনতা মূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়। আলোচনা সভা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের নতুন একাডেমিক ভবনের নিচতলায় কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হয়। কিডনী রোগ বিভাগ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা মো নুরুল হুদার সভাপতিত্বে উক্ত সেমিনারে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ ওমর ফারুক ইউসুফ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও কিডনী রোগ বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ইমরান বিন ইউনুস, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ জসিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের

পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন ,চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ আব্দুর রব, চট্টগ্রাম মা ও শিশু মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা এম এ কাসেম, অধ্যাপক ডাঃ এ এম এম এহতেশামুল হক, ইউরোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডাঃ কাজী মোঃ মনোয়ারুল করিম বাবর। আলোচনার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডাঃ মোঃ ফয়েজুর রহমান।

সেমিনারে এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে আলোকপাত করেন ডা রোসান্না বিনতে কামাল। কিডনী রোগ বিভাগের বিগত বছরের কার্যক্রমগুলো তুলে ধরা ও পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা মেরিনা আরজুমান্দ।
সভাশেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ সৈয়দ মাহতাবুল ইসলাম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নেফ্রোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শফিউল হায়দার রুশনী ও ডাঃ রফিকুল হাসান। নেফ্রোলজি বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডাঃ ইমরান বিন ইউনুস চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন থেকে বিশেষ সম্মাননায় ভূষিত হওয়ায় নেফ্রোলজি বিভাগের পক্ষ থেকে উনাকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।

সেমিনারে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে কর্মরত সকল শিক্ষক ও চিকিৎসকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সেমিনার শেষে রোগী ও সাধারণ জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে বেলুন উড়িয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মেয়র ডাঃ শাহাদাত হোসেন। শোভাযাত্রা নতুন একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে গোলচত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পুরো অনুষ্ঠানে সার্বিক ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা করেন ডাঃ মোহাম্মদ আবদুল কাদের, ডাঃ জাহেদ উদ্দিন। উল্লেখ্য প্রতি বছর বিশ্বব্যাপি কিডনী রোগ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মার্চ মাসের দ্বিতীয় বৃহস্পতিবার বিশ্ব কিডনী দিবস পালিত হয়ে থাকে।

চট্টগ্রামে নোংরা পরিবেশে মিষ্টান্ন তৈরি, জরিমানা গুনল দোকানদার

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট চৈতী সর্ববিদ্যা এর নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার নগরীর রিয়াজ উদ্দিন বাজারের তিন পুল এলাকায় অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযান কালে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিষ্টান্ন দ্রব্য তৈরি ও বিক্রি করার অপরাধে মক্কা সুইটসকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ