আজঃ রবিবার ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

স্মরণে শাহানশাহ হযরত শাহসূফি সৈয়দ মোহাম্মদ শাহাজাহান চৌধুরী মাইজভাণ্ডারী (ক.) হাবিবুল বাশার

প্রেস রিলিজ

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

পঞ্চাশের দশকে হযরত গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারী (ক.) এর কুঞ্জে একটি পুষ্প প্রস্ফুটিত হয়। বলছি সৈয়দ মোহাম্মদ শাহাজাহান চৌধুরী মাইজভাণ্ডারী (ক.) এর কথা। জন্মের প্রারম্ভেই নানাজান সুলতানুল আউলিয়া অছিয়ে গাউছুল আজম সৈয়দ দেলাওর হোসাইন মাইজভাণ্ডারী (ক.) তাঁকে কোলে নিয়ে ভবিষ্যৎ আধ্যাত্মিক অবস্থান ইঙ্গিত করে মন্তব্য করেন। নাবগত শাহজাদার জন্মলগ্নের খুশির উল্লাসে হয়তো সে কথা অনেকের লক্ষ্যণীয় কিংবা ভাবার মতো ছিলো না।

প্রাইমারি স্কুল শেষ করে শাহনগর উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে ১৯৬৭ তে নানুপুর আবু সোবহান উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। খুব সম্ভবত অষ্টম শ্রেণিতে থাকাকালীন পিতা আবদুল মজিদ চৌধুরী (র.) ইন্তেকাল করেছিলেন। তারপর দৌহিত্রকে নানাজান মাইজভাণ্ডার শরীফে নিয়ে যান আর সেখানে থেকেই ম্যাট্রিকুলেশনের পড়াশোনা ও পরীক্ষা সম্পন্ন করেন। নানাজানের ভক্ত, বাড়বকুণ্ডস্থ তৎকালীন ডিডিটি ফ্যাক্টরির ম্যানেজার জনাব হেদায়েত সাহেব একদা দরবারে পাকে জেয়ারত কার্য সম্পন্ন করে পীরের সাথে কথা বলার সময় প্রসঙ্গত তাঁর ব্যাপার উত্থাপিত হয়। উক্ত ফ্যাক্টরিতে চাকরির জন্য হেদায়েত সাহেব তাঁকে সঙ্গে দিয়ে দিতে বলেন। সাথে সাথে অছিয়ে গাউছুল আজম শাহনগর মানুষ পাঠিয়ে দৌহিত্রকে দরবারে

আনান। হেদায়েত সাহেবের সঙ্গে তাঁকে ডিডিটি ফ্যাক্টরিতে কার্যে নিয়োগের উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দেন। লেবার অফিসার হিসেবে তিনি সেখানে নিয়োগকৃত হন। প্রথমত অন্যান্য সিনিয়র অফিসারদের সাথে থাকার ব্যবস্থা করলেও পরবর্তীতে মুর্শিদের পরিবার তথা বংশধর হিসেবে হেদায়েত সাহেব তাঁর জন্য আলাদা একটি থাকার স্থান ব্যবস্থা করেন।

ফ্যাক্টরিতে অফিসার হিসেবে বেশ স্বাভাবিকভাবেই কাজকর্ম করে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ একদিন খবর পাঠানো হলো তিনি রাতে ঘুমান না, বেশিরভাগ সময়ই জজবা অবস্থায় (অধ্যাত্ম ভাবে উত্তপ্ত) থাকেন। এরূপ স্বাভাবিক প্রকৃতি পরিবর্তিত হওয়ায় হেদায়েত সাহেব তাঁকে দরবার শরীফ নিয়ে আসেন। এখানেই মূলত তাঁর অবস্থা পরিবর্তনের সূত্রপাত। এরপর নানা ঘটনাপ্রবাহের মধ্য দিয়ে চলতে থাকে জীবনাচরণ। আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালে কদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরপর পুনরায় চাকরিতে যোগদান করে কদিন বাদে নিজে হেঁটেই বাড়বকুণ্ড থেকে প্রত্যাবর্তন করেন। এরপর আবার হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে ডাক্তার তাঁকে চাকরিতে প্রেরণ করতে বারণ করে দেন। বহু চিকিৎসা তদবির করেও কোনো কূল কিনারা হলো না। অলক্ষ্যতে ছিলো নানাজান হয়ে হযরত গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারীর (ক.) পবিত্র বেলায়তের সম্পর্ক। যার ফলশ্রুতি ঐহিক কোনো হিসাব-নিকাশে তাঁর পরিবর্তিত বৈশিষ্ট্যের অর্থ

খুঁজে না পাওয়া। আধ্যাত্মিক সম্পর্কটি প্রথমাবস্থায় নানাজান হতে প্রত্যয়ন এবং পরবর্তীতে তা প্রকাশ-বিকাশ, সংস্রব হয় বড় মামাজানের মাধ্যমে। বড় মামাজান বিশ্বঅলি শাহানশাহ হযরত শাহসূফি সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) এর অধ্যাত্ম নজরে ছিলেন জ্যৈষ্ঠ বোনপুত্র এবং তিনিই তাঁর মুর্শিদ। বাড়বকুণ্ড ফেরত হওয়ার পর থেকে শুরু হয় নতুন অধ্যায়। ইবাদত-রেয়াজতে কঠোর পরিশ্রম সাধনায় গ্রহণ করেন উচ্চতর ঐশ অবস্থান। লব্ধ করেন অসীম শক্তি। সেসবের বর্ণনা সংক্ষিপ্ত কলেবরে তুলে ধরা সম্ভব নয়।
তাঁর সংস্পর্শে অসংখ্য ঐশী অনুগ্রহ প্রত্যাশী, ইচ্ছা পূরণ অভিলাষী, কঠিন রোগে জর্জরিত ইত্যাদি নানা প্রকারের মানুষ ভিড় জমে থাকতো। দেশের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদসহ খ্যাতনামা বহু ব্যক্তিবর্গ তাঁর অনুগ্রহ প্রত্যাশী ছিলেন। দূর হতে করা মন্তব্য, মনে উদিত

ভাবনার কথা কিংবা কাঙ্খিত অভিলাষের ব্যাপারে তিনি বলে দিতেন তাঁরা ব্যক্ত করার আগেই। মনোবাঞ্ছা বলার প্রয়োজন হতো না, উপস্থিত হওয়া মাত্রই তিনি সে ব্যাপার সমাধান করে দিতেন। এ ঘটনা ছিলো নিত্যনৈমিত্তিক। বহু জটিল কঠিন ডাক্তার ফেরত রোগীকে ঐশী অনুগ্রহ দিয়ে সুস্থ করে দিয়েছিলেন। তাঁর দ্বারা বিদ্যার্থীদের উদ্দিষ্ট লাভ, ব্যবসা বাণিজ্যে বরকত প্রাপ্তি কিংবা চাকরি বাকরিতে কাঙ্ক্ষিত সফলতা অর্জন ইত্যাদি নানা প্রকারের অলৌকিক ঘটনা প্রকাশিত হয়েছে প্রত্যহ। সুউচ্চ মর্যাদার অধিকারী আল্লাহর এ মহান অলির সুদৃষ্টিতে মহান আল্লাহ অগণিত জনকে সৌভাগ্যবান করেছেন।

মাইজভাণ্ডারী অধ্যাত্ম ধারা খিজিরী প্রকৃতির। সসর্বসাধারণের বোধগম্য নয়। বেলায়তে খিজিরী অবস্থার অত্যুজ্জ্বল প্রদীপ ছিলেন শাহানশাহ হযরত শাহসূফি সৈয়দ মোহাম্মদ শাহাজাহান চৌধুরী মাইজভাণ্ডারী (ক.); যার প্রতিটি কর্ম, প্রতিটি মুহূর্তের ক্রিয়াকলাপ ছিলো দুর্বোধ্য ও রহস্যঘেরা- অর্থবাহী। প্রতিনিয়ত অসংখ্য আদম সন্তান তাঁর পবিত্র রওজা হতে অনুগ্রহ প্রাপ্ত হয়ে আল্লাহর রহমতের অধিকারী হচ্ছে।

প্রবন্ধকার- হাবিবুল বাশার

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

বোয়ালখালীতে আহল্লা দরবার শরীফ ৩ দিন ব্যাপী ওরশ আজ শুরু

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী আহলা দরবার শরীফের প্রাণসত্তা, হাযত রওয়া মুশকিল ক্বোশা, সুলতানুল মোনাজেরীন হযরতুল আল্লামা শাহসূফি গাজী আবুল মোকারেম মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম আল কাদেরী, আল চিশতি প্রকাশ নুরী বাবা (রহ.)’র ৪৯ তম উরশ শরীফ আহলা দরবার শরীফে মহা সমারোহ ১২ ডিসেম্বর ২৭ অগ্রহায়ণ ৩ দিন ব্যাপী ওরশ আজ শুক্রবার থেকে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ।

ওরশ শরীফ পরিচালনা করবেন পীরে কামেল হযরতুল আল্লামা শাহসুফি মাওলানা আলহাজ্ব সৈয়দ এ, জেড, এম সেহাবউদ্দীন খালেদ আল কাদেরী আল চিশতী (রহ)র সাহেবজাদা আহলা দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন, রাহবারে তরিকত শাহসূফি সৈয়দ আবরার ইবনে সেহাব আল কাদেরী, আল চিশতি (মা,জ্বি,আ) সাহেব কেবলা।

ইতিমধ্যে ওরশের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রতি বছরই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে দর্শনার্থী, ভক্ত মুরিদানের ব্যাপক সমাগম হয়। তথ্য মতে, সৈয়দ আবুল মোকাররম মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম (নূরী বাবা) আল-কাদেরী আল্-আলচিশতি (রহ:) মাইজভান্ডার শরীফের গোড়া পত্তনকারী গাউসুল আজম হযরত শাহসূফী মাওলানা সৈয়দ আহমদ উল্লাহ (ক) প্রকাশ হযরত কেবলার আধ্যাত্মিক শিষ্য আহলা দরবার শরীফের প্রাণ পুরুষ কুতুবে জমান হযরত শাহসূফি মাওলানা কাজী আজাদ আলী (ক) এর জৈষ্ঠ্য পৌত্র।

তিনি আধ্যাত্মিক দরবারে ভক্ত মুরীদের নিকট আল্লাহও বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত, জগতকুূলের জন্য মহানস্রষ্টার সর্বশ্রেষ্ঠ করুনা সৃষ্টিকুলে শিরোমণি, পাপী-তাপির ত্রাণকর্তা ,নবীকুলে শ্রেষ্ঠ প্রিয় হাবিব রাসূল পাক হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রেম আদর্শ শিক্ষা দিয়ে যান। তিনি আল্লাহর দ্বীন ও তরিকতের খেদমতে নিজের পূর্ণ জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। অলি- ইল্লাহ ও মুরশিদের প্রতি ভক্তদেরকে পুনঃ পুনঃ,আদব শিক্ষা দিয়ে গেছেন।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের শেষ দিকে একবার তীব্র খরা দেখা দেয় এবং অনাবৃষ্টির কারণে গ্রামে দুর্দশা চরমে পৌঁছে। পানির অভাবে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। খাল-বিল, নদী-নালা ও পুকুর শুকিয়ে যায় এবং ক্ষেত-খামারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই যুগে গ্রামীণ এলাকায় টিউবওয়েলের ব্যবহার ছিল না, আর তাই খাল-বিল- নদী- নালা-পুকুর শুকিয়ে যাওয়ায় মানুষের জীবন যাপন কঠিন হয়ে পড়ে। কেননা, বহুল প্রচলিত একটি প্রবাদে বলা হয়েছে “পানির অপর নাম জীবন।” ঠিক এমনি এক সংকটকালে একদিন হযরত নূরী বাবা (রহ:) কধুরখীল গ্রামের এক ওয়াজ মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদানের জন্যে সেখানে যান। গ্রামের লোকজন হযরত নূরী বাবা (রহ:)-কে কাছে পেয়ে তাঁকে মহান স্রষ্টার প্রিয় বন্ধু জেনে তাঁর খেদমতে তাঁদের এই দুর্দশার কথা আর্জি হিসেবে পেশ করেন এবং পরম করুণাময় আল্লাহ্তা’লার দরবারে এই দুর্দশা লাঘবের জন্যে তাঁকে অসিলা করেন। হযরত নূরী বাবা (রহ:) গ্রামের জনগণকে এই বলে বোঝান যে সবই আল্লাহ্ পাকের ইচ্ছা; তিনিই মুশকিল তথা সংকট দিতে পারেন, আবার তিনিই তা আসান তথা লাঘব করতে পারেন। কেননা, সবই তাঁর ইচ্ছাধীন।

হযরত নূরী বাবা (রহ:) আরও বলেন, “একদিকে আপনারা যেমন বৃষ্টির জন্যে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করছেন, অন্যদিকে ইটের ভাটার মালিকরা অনাবৃষ্টির জন্যে খোদার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন। এ বড়ই পরস্পর বিরোধী অবস্থান, পরস্পর বিরোধী স্বার্থের বিষয়।” কিন্তু ওয়াজ মাহফিলে উপস্থিত উলামায়ে কেরাম ও সমবেত শ্রোতামন্ডলীর বারংবার বিনীত অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে হযরত নূরী বাবা (রহ:) তাঁর সারগর্ভ বয়ানসমৃদ্ধ ওয়াজ শেষে মোনাজাতের সময় হযরত রসূলে করীম (দঃ) ও বুযুর্গানে দ্বীনের অসিলায় ওই অঞ্চলে বৃষ্টির জন্যে পরম করুণাময় আল্লাহতা’লার দরবারে কাতরভাবে ফরিয়াদ করেন।

আর অমনি মোনাজাত শেষ না হতেই ঝুপ ঝুপ করে মুষল ধারে বৃষ্টি নেমে এলো। উপস্থিত সবাই প্রার্থনারত অবস্থায় তাঁদের প্রাণের আকুতি পূরণ হতে দেখে চরম বিস্ময়ে বৃষ্টিতে ভিজে যাবার কথা বিস্মৃত হলেন এবং ভাবাবেগে আপ্লুত হলেন। অতঃপর মোনাজাত শেষে হযরত নূরী বাবা (রহ:) সাহেবে দাওয়াত, অর্থাৎ, যিনি তাঁকে এখানে আনার এন্তেজাম করেছিলেন, তাঁর বাড়িতে তাশরিফ নিলে ওয়াজ মাহফিলে উপস্থিত সবাই কৃতজ্ঞ চিত্তে এই মহান ওলির কাছে বায়াত হন। ইমাম যুরকানী মালেকী (রহ:) তাঁর প্রণীত বিখ্যাত আল্ মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়া গ্রন্থে অসংখ্য হাদীস উদ্ধৃত করেছেন, যেগুলোতে আমরা জানতে পারি যে গাউস, আবদাল, আকতাব, নুজাবা, নুকাবা প্রমুখ ওলি-আউলিয়ার মাধ্যমে
আল্লাহ্তা’লা একটি আধ্যাত্মিক প্রশাসন জারি রেখেছেন। এই ওলি-আউলিয়ার মাধ্যমেই দুনিয়াতে বৃষ্টিপাত হয়, ফলে ফসলে মাঠ-প্রান্তর ভরে যায়, উট হৃষ্টপুষ্ট হয়, মাছ হৃষ্টপুষ্ট হয় এবং দুনিয়া থেকে বালা মসীবত দূর হয়। হযরত নূরী বাবা (রহ:)-এর এই কারামত মহানবী (দ:) এর ওই শাশ্বত বাণীর এক বাস্তব রূপ, জ্বলন্ত নজির।

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের দোয়া মাহফিল খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায়

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রেস ক্লাবের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা, সিনিয়র সাংবাদিক এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

দোয়া মাহফিলে বক্তারা বলেন, দেশের গণমাধ্যমের উন্নয়ন, সাংবাদিক সমাজের কল্যাণ এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বেগম খালেদা জিয়া ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অবদান চট্টগ্রামের সাংবাদিক সমাজ চিরদিন স্মরণ করবে। বক্তারা ঐতিহাসিক অবদান স্মরণ করতে গিয়ে উল্লেখ করে বলেন, ১৯৭৮ সালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের উন্নয়নে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ২ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছিলেন।

১৯৮০ সালে বায়েজিদের শেরশাহ এলাকায় সাংবাদিকদের আবাসনের জন্য সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটি-তে ১৬ একর জমি বরাদ্দ দেন, যা ১৯৮১ সালে বিচারপতি আব্দুস সাত্তার সরকারের আমলে তা রেজিস্ট্রি করা হয়। ১৯৯৪ সালে প্রেস ক্লাবের আর্থিক সংকট মোকাবিলায় তৎকালীন মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমানের অনুরোধে প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ১৫ লাখ টাকা অনুদান প্রদান করেছিলেন।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের শৃঙ্খলা ও ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মইনুদ্দীন কাদেরী শওকত বলেন, বেগম খালেদা জিয়া প্রেস ক্লাবের জন্য অসামান্য অবদান রেখেছেন। আমি অতীতে তাকে আজীবন সদস্যপদ দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলাম, কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি। এখন আবারও অনুরোধ জানাই—বেগম খালেদা জিয়াকে প্রেস ক্লাবের আজীবন সদস্যপদ প্রদান করা হোক।

দোয়া মাহফিলে দেশ ও জাতির শান্তি, কল্যাণ ও স্থিতিশীলতার পাশাপাশি বেগম খালেদা জিয়ার সুস্বাস্থ্য কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন শাহ আনিস জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন।
দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন প্রেস ক্লাবের অন্তবর্তী কমিটির সদস্য মুস্তফা নঈম, চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান, প্রেস ক্লাবের সাবেক লাইব্রেরি সম্পাদক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলামসহ অন্য সদস্যরা।মাহফিল শেষে বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘায়ু ও সুস্থতার জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ