আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রাম মহানগরীর নিরাপত্তায় মাঠে থাকবে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দেড়গুণ পুলিশ।

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

পবিত্র ঈদুল ফিতরের টানা বন্ধে চট্টগ্রাম নগরীতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দেড়গুণ বেশি পুলিশ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে। সাদা পোশাকের সদস্যরাসহ সকল ইউনিটকে মাঠে নামানোর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)।
সিএমপির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রমজানের শুরু থেকেই পুরো চট্টগ্রাম নগরীতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মূল সড়কের পাশাপাশি অলি-গলিতে টহল জোরদার করা হয়েছে। মধ্য রমজান থেকে মার্কেট-শপিংমলের সামনে পুলিশি কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে। এর পরের কার্যক্রম শুরু হবে ঈদের ছুটির শুরুর দিন থেকে, যাতে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা মাঠে নামবেন।

ঈদের ছুটিসহ বন্ধের পুরোসময় ফাঁকা নগরী, ঈদ জামাত এবং বিনোদন কেন্দ্রগুলোকে ঘিরে এবার ঈদের নিরাপত্তা পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এডিসি-মিডিয়া) মাহমুদা বেগম বলেন, আমরা যখন রমজান নিয়ে প্ল্যান করছিলাম, তখন ঈদেরটাও মোটামুটি করে রেখেছিলাম। কারণ রমজানের শেষ ১০ দিনে মার্কেটগুলোতে মানুষের ভিড় বাড়ে। মার্কেটকেন্দ্রিক আমাদের পেট্টল টিম কাজ করছে। আবার ঈদের ছুটিতে বাড়ি-ঘরে যাওয়ার তাড়া থাকে। এবার সরকারি ছুটি বেশি। মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে বাড়ি যেতে পারে, সেজন্য বাস টার্মিনালগুলোতে আমরা নিরাপত্তা বাড়িয়েছি।
তিনি বলেন, ঈদের সময় নগরী ফাঁকা হয়ে যাবে।

মানুষজন থাকবে না। আমাদের নাগরিকদের আমরা আহ্বান জানাবো, নিজেদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে। নিজেদের বাসায় সিসিটিভি ক্যামেরা লাগালে তাহলে সেটা মোবাইলের মাধ্যমে দেশের যে প্রান্তেই থাকুক না কেন দেখতে পারবে। এ ছাড়া ঈদে পুলিশের টহল স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বাড়ানো হবে।
এডিসি মাহমুদা আরও জানিয়েছেন, ঈদের সময় স্বাভাবিকের চেয়ে নগরীতে দেড়গুণ বেশি পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট থানাগুলো থেকে আবাসিক এলাকার তালিকার পাশাপাশি তাদের চূড়ান্ত নিরাপত্তা পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

আবাসিক এলাকা এবং বাণিজ্যিক ভবনগুলোর দিকে পুলিশের নজর বেশি থাকবে বলে তিনি জানান।
নগর পুলিশের বিশেষ শাখার উপ-কমিশনার মোখলেছুর রহমান জানিয়েছেন, ঈদ উপলক্ষ্যে ঘরমুখো মানুষের নিরাপত্তা এবং ফাঁকা নগরীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সাদা পোশাকে ২০০ পুলিশ সদস্য এবার মাঠে নামানো হচ্ছে। এর পাশাপাশি পুলিশের অন্যান্য টিমও থাকবে।

তিনি আরও বলেন, সিটিএসবির ২০০ সদস্যকে আমরা মাঠে রাখব। ঈদের নামাজ, বিনোদন কেন্দ্র, ফাঁকা নগরীর নিরাপত্তা- মোটামুটি সবকিছু নিয়েই প্ল্যান করা হয়েছে। মানুষ যাতে ঈদে বাড়ি যাওয়ার সময় হয়রানির শিকার না হয়, সেটাও আমরা নজরদারিতে রাখব।
সিএমপি কর্মকর্তারা বলছেন, গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর নগরীতে যেভাবে ছিনতাই-চুরি বেড়ে গিয়েছিল, রমজান আসার আগেই সেটার

লাগাম টানতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। ১৬ থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে প্রচুর চোর-ছিনতাইকারীসহ পেশাদার অপরাধী গ্রেফতার করা হয়েছে। ছিনতাই কমে যাওয়ায় এবার নগরবাসী স্বস্তিতে ঈদের বাজার করতে পারছেন। একইভাবে ঈদুল ফিতরও স্বস্তিতে কাটবে বলে সিএমপি কর্মকর্তাদের।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

দেশ বদলাতে থ্রি জিরো থিওরি আদর্শ মডেল: চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার

চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন বলেছেন, দেশ বদলাতে তথা পৃথিবী বদলাতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর থ্রি জিরো থিওরি একটি আদর্শ মডেল। এ মডেল অনুসরণ করে আমাদের তরুণ সমাজ কাজ করলে দেশে যেমন ক্ষুধা এবং বেকারত্ব দূর হবে, তেমনি মানবজাতি জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বেঁচে থাকবে।
কমিশনার রোববার চট্টগ্রামের জেলা তথ্য অফিস

আয়োজনে চট্টগ্রাম যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অডিটোরিয়ামে ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই সব কথা বলেন।বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আজকের বিশ্বে তরুণদের জন্য সম্ভাবনা ও সুযোগের ক্ষেত্র দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। বর্তমানে শুধু চাকরির পিছনে ছুটে সীমাবদ্ধ না থেকে নিজেদের যোগ্যতা, সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে উদ্যোক্তা হতে হবে।

সভপতির বক্তব্যে মোঃ বোরহান উদ্দীন বলেন, যুবক-যুবতীদের নিজেরা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার এবং পরিবারের লোকদেরকে ভোট দিতে উৎসাহিত করেন। তিনি বলেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে নির্বাচন উৎসব হবে। এই উৎসবে সকল প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আশা করে সরকার। এজন্য নির্বাচনী পরিবেশকে অবাধ, সুষ্ঠু ও ভয়হীন করার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

জেলা তথ্য অফিস, চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোঃ বোরহান উদ্দীন সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ আবুল বাশার, আঞ্চলিক তথ্য অফিস, চট্টগ্রামের সিনিয়র তথ্য অফিসার বাপ্পী চক্রবর্তী, সরকারি শারীরিক শিক্ষা কলেজের অধ্যক্ষ এস এম গিয়াসউদ্দিন বাবর, আব্দুল বারী প্রমূখ বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন । যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণরত প্রায় ১৫০ জন প্রশিক্ষণার্থী এবং প্রিন্ট ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ঠাকুরগাঁওয়ে নবাগত পুলিশ সুপারের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা

ঠাকুরগাঁওয়ে নবাগত পুলিশ সুপার বেলাল হোসেনের সাথে স্থানীয় সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৭ ডিসেম্বর রবিবার দুপুর ১২টায় জেলা পুলিশ সুপারের কনফারেন্স রুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।এসময় পুলিশ সুপার বেলাল হোসেন বলেন, মিডিয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষের বাকস্বাধীনতা একমাত্র মিডিয়ার মাধ্যমেই রক্ষা করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের সেবা করাই আমার প্রথম কাজ। মাদক সব অপরাধের মূল উৎস। তাই যেকোনো মূল্যে সমাজকে মাদকমুক্ত করতে হবে। এসময় যানজট, মাদকমুক্ত করতে ও বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন পুলিশ সুপার।


এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) খোদাদাদ হোসেন,সহকারী পুলিশ সুপার রাণীশংকৈল সার্কেল স্নেহাশীষ কুমার দাস, ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবের সভাপতি মনসুর আলী, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লুৎফর রহমান মিঠু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান তানু সহ জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।উল্লেখ্য,গত ২৯ নভেম্বর বেলাল হোসেন ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ